অবশেষে ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার

ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার, পুলিশ সপ্তাহের পর তদন্ত

 

অবশেষে প্রত্যাহার করা হলো ডিআইজি মিজানকে। গতকাল মঙ্গলবারই তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশ সপ্তাহ শেষ হলেই এই কর্মকর্তার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মিজানের পদবি পুলিশের উপমহাপরিদর্শক তথা ডিআইজি।

ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার, পুলিশ সপ্তাহের পর তদন্ত

গতকাল দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তার (মিজান) বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমরা তাকে ডিএমপি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করেছি। সোমবার থেকে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠান শেষে মিজানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হবে।’ কোনো ব্যক্তির দায় বাহিনী নেবে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। পুলিশের অনেক সদস্যও বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে রয়েছে।’

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি সপ্তাহে ডিআইজি মিজানের নারী নির্যাতনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন পুলিশ কর্মকর্তারা। গতকাল কালের কণ্ঠসহ কয়েকটি সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সকালেই সিদ্ধান্ত নেয় মিজানকে প্রত্যাহারের। দুপুরে প্রত্যাহারের ব্যাপারে চিঠি ইস্যু হয়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। তবে এসংক্রান্ত চিঠি হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ইকো ও তাঁর মা কুইন তালুকদার। তাঁরা বলেন, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের কাছে তাঁদের বাসা। গত বছরের জুলাইয়ে কৌশলে ইকোকে তুলে নিয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তা মিজান এবং তাঁর বেইলি রোডের বাসায় তিন দিন আটকে রাখেন। এরপর বগুড়া থেকে ইকোর মাকে ডেকে আনা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা কাবিনে ইকোকে বাধ্য করা হয় মিজানকে বিয়ে করতে। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে ইকোকে তোলেন মিজান। ইকো অভিযোগ করেন, কয়েক মাস কোনো সমস্যা না হলেও তিনি ফেসবুকে মিজানের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি পোস্ট করার পর ক্ষিপ্ত হন মিজান। ভাঙচুরের মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে তাঁকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। ওই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়। ওই মামলায়ও জামিনে বেরিয়ে এসে মিজানের বিরুদ্ধে মুখে খোলেন ইকো। তবে বিয়ে ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে মিজান বলছেন, ওই নারী একজন প্রতারক।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment